প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মাগুরার কৃষকরা পাকা আমন ধান সুষ্ঠুভাবে ঘরে তুলতে না পারায় কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো মৌসুমে ভালো ফসল উৎপাদনে বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা নিয়ে বীজতলা তৈরি করছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার আট ইউনিয়নের কৃষকেরা। পাঁকা আমন ধানের ক্ষতি হওয়ায় কৃষি অফিসের পরামর্শে আবারও ধান রোপন করেছেন তারা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ছয় হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। দুই হাজার হেক্টর হাইব্রিড ও চার হাজার হেক্টর উফশী ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষকদের আদর্শ বীজতলা তৈরির জন্য কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিচ্ছে। তবে এ বছর এলাকার বেশির ভাগ কৃষক উফশী ব্রি- ২৮, হাইব্রিড এ এসএল ৮ এইস জাতের ধান চাষের লক্ষ্যে বীজতলা তৈরি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে উফশী অন্য জাতের মধ্যে ব্রি- ২৯ ব্রি- ৮১, ব্রি-৮৪ ব্রি- ৮৯ ব্রি- ৯২ ইত্যাদি জাতের ধান চাষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনাঞ্চলে যেসব কারণে বোরোর আশানুরূপ ফলন হয়নি
সরেজমিনে দেখা গেছে, আট ইউনিয়নের বাবুখালী, দীঘা, বিনোদপুর, রাজাপুর, নহাটা, বালিদিয়া, পলাশবাড়ীয়া ও মহম্মদপুর সদরের কৃষকদের আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে। নিচু জমিতে বীজতলা তৈরি করে বোরোর চারা তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেক কৃষক।
উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের চালিমিয়া গ্রামের কৃষক জিবলু মোল্যা বলেন,ভালো ফলন হওয়ায় এই বছর ব্রি-২৮ রোপন করেছি। তবে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের সময় প্রচুর বৃষ্টিতে আমার ৫০ শতক জমির ধান পানিতে ডুবে যায়। বোরো ধান চাষ দ্রুত করার চেষ্টা করছি।
কৃষক আকিদুল মোল্যা বলেন, আমার নিজের জমি নেই। তাই বর্গাচাষ করি। চারা তৈরি করতে বীজতলা করেছি। আশা করছি কয়েক সপ্তাহ পরে রোপন শুরু করতে পারব। এবার ডিজেলের দাম বেশি হওয়াতে গত বছরের তুলনায় বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ বাড়বে সাত হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: যশোরাঞ্চলে বোরো ধানের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক-কৃষাণি
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রণব কুমার বলেন, আমার ব্লকে কৃষকদের সুষম মাত্রার সার ব্যবহার, জৈব, অজৈব ও গুটি ইউরিয়া সার প্রয়োগ এবং পোকামাকড় দমনসহ কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি।
মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, অতিবৃষ্টিতে কৃষকদের অনেকের আমনের ফলন ভালো হয়নি। বোরোর আবাদে তারা যেন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন সে বিষয়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা পরামর্শ দিচ্ছেন।